প্রত্যয় ডেস্ক: বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে কয়েকদিন ধরেই টানা সংঘাত চলছে। গত কয়েকদিনের সংঘাতে দু’দেশের বেসামরিকসহ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় তুরস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে আর্মেনিয়া। দেশটি বলছে, নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে তুরস্ক তাদের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সোভিয়েত-নিমির্ত এসইউ-২৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় বিমানটির পাইলটের মৃত্যু হয়েছে। আর্মেনিয়ার আকাশসীমায় তুরস্কের এফ-১৬ বিমান প্রবেশ করেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রতিবেশী এই দু’দেশের মধ্যে সংঘাতে আজারবাইজানকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক। তবে আর্মেনিয়ার যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি অস্বীকার করেছে দেশটি।
তিনদিন ধরে দেশ দু’টি সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। এতে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। জাতিসংঘ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও দু’পক্ষই তা উপেক্ষা করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, তুরস্ক আজারবাইজানের পক্ষে থাকলেও রাশিয়া আর্মেনিয়ার প্রতি নমনীয়। আর্মেনিয়ায় তাদের একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তবে তাদের আজারবাইজানের সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দু’পক্ষকেই সংঘাত থামানোর আহ্বান জানিয়ে আসছে রাশিয়া।
১৯৮০’র দশকের শেষদিকে কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভেতরে হলেও আর্মেনিয়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে জাতিগত আর্মেনীয়রা।
২০১৬ সালের পর এবারই প্রথম এই অঞ্চলে বড় ধরনের সংঘাতের জড়িয়ে পড়েছে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান। ওই অঞ্চলে দুই দেশের সামরিক বাহিনী ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করেছে উভয় পক্ষই। আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শুশান স্টেপানইয়ান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার তাদের এসইউ-২৫ যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। এতে বিমানটির পাইলট ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, তুরস্কের এফ-১৬ বিমান আর্মেনিয়ার আকাশসীমায় ঢুকেছিল। তবে তুরস্ক তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, এই খবর সত্যি নয়।